নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি কর্মী কবির হোসেনকে (৩৭) গুলি করে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত কবিরের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে পাঁচ থেকে ছয়জনকে।
গতকাল দুপুরে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ জানায়, হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মামলার আসামি শাহ আলম (৫৪), মো. সহিদ ওরফে কালাম (৪০) ও সন্দেহভাজন কাউছার আলম (৪০)। তাঁদের আজ শনিবার দুপুরে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে কবির হোসেন হত্যা মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান। আজ সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর পরই থানা-পুলিশের একাধিক দল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। অভিযানে শুক্রবার রাতে এজাহারনামীয় দুজনসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আসা একদল মুখোশধারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বিএনপির কর্মী কবির হোসেনকে লক্ষ্য প্রথমে গুলি করেন। তখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলে পায়ের রগ কেটে এবং গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা আবার অটোরিকশায় পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত কবিরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
দলীয় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে জায়গা ও দোকান নিয়ে বিরোধ ছিল কবিরের, তা ছাড়া আট বছর আগে তাঁর বড় ভাই আলমগীরকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করার পর কবির নিজেই একটি সন্ত্রাসী দল গড়ে তোলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন কবির। ওই সব মামলার কারণে তিনি দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকায় ফিরে এসে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এসব কারণে তিনি হত্যার শিকার হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।