Home » আগে রাজনীতির সংস্কার করতে হবে : মান্না

আগে রাজনীতির সংস্কার করতে হবে : মান্না

by radesk
0 comments

মানুষের জীবন মান ও অর্থনীতির উন্নয়নে রাষ্ট্রের প্রতি পদক্ষেপে সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, সংস্কার যদি করতে হয় সবার আগে রাজনীতির সংস্কার করতে হবে। আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ‘মানবাধিকার ও প্রতিহিংসার রাজনীতি’ শীর্ষক সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

মান্না বলেন, ‘জীবন মানে উন্নয়নে বিশ্বের অনেক দেশে জেনজি’রা আন্দোলন সংগ্রাম করছেন। তবে আমাদের দেশের আবু সাঈদ-এর মতো কেউ সাহস দেখাতে পারেননি। তিনি বুক পেতে গুলি নিয়েছে। অনেকেই অকাতরে জীবন দিয়েছে।

আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরাও এই সাহস দেখাতে পারেন নি। যদি জানতে চান তারা কেমন দেশ চান, বিগত আমলের অনেক খারাপ বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন এবং বলেন এগুলো আমরা চাই না। এটাই জেন জি’র চাওয়া নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন। ফলে তাদের আকাঙ্ক্ষার উপর নির্ভর করেই দেশ গড়াকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এই আকাঙ্ক্ষায় রাজনৈতিক দল গড়ার বিকল্প নেই।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার মত হৃদয়হীন শাসকের পর ড. ইউনূস সরকার এসেছেন। যদি বলেন ইউনুস কতটুকু সফল, আমি দশে দেব চার। যদিও তিনি অসাধারণ মানুষ, যার কোন ধান্দা নেই, ক্ষমতার লোভ নেই। একটি ভালো গণতন্ত্র ও নির্বাচনের পথ সুগম করার চেষ্টা করছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলছেন তাড়াতাড়ি ভোটের ব্যবস্থা করে দেন। আমি তাদের বলব, আপনারা ক্ষমতায় আসলে কি কি করবেন  জনগণের কাছে তা অঙ্গীকার করেন। গণতন্ত্রের লড়াই লড়বেন সেই অঙ্গীকার থাকতে হবে। অনেকেই আবার বলেন, তারা কোরআনের কনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করতে চান। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, অন্য কনস্টিটিউশন আছে। এটা বাদ দিয়ে যদি কুরআনের কনস্টিটিউশনে চলে, তবে এত কষ্টের কি প্রয়োজন ছিল?’

প্রতিহিংসার রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত সময়কার রাজনীতি দেখেছি। এরশাদ যেন পালাতে না পারে, মানুষ বিমানবন্দর পাহারা দিয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর  শেখ হাসিনা দেশে থাকলে হয়তো আর সেনাবাহিনীও তাকে ক্যান্টনমেন্টে রাখতে পারত না। এটাই প্রতি হিংসার রাজনীতি। অনেকে হয়তো প্রতিহিংসাকে পছন্দ করেন। সরকারে যারা থাকেন, তারাই ঠিক করবেন সমাজে প্রতিহিংসা থাকবে কি না।’

‘রাজনীতির ধরন যদি পাল্টাতে না পারি, পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের কাছেও খুব বেশি আশাবাদী হতে পারি না। আগের মত মানুষগুলোই ক্ষমতায় আসবে। পুলিশ যেন ভবিষ্যতে  আর মানবাধিকার লঙ্ঘণ করতে পারে সে লক্ষ্যে আইনের সঠিক প্রয়োগ থাকতে হবে।’

মেজর জেনারেল (অব) এহতেশাম উল হক বলেন, ‘গত ১৬ বছর ছিল স্বাধীনতার পর ৫২ বছরের সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘণের সময়। পাকিস্তান থাকে যে উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা এনেছি, সেই মৌলিক স্বাধীনতা, বিশেষ করে বাক স্বাধীনতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘণ হচ্ছে। সরকার নিজেরাই লুটপাটকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। করোনাকালীন সময় আমরা দেখেছি আমাদের স্বাস্থ্যখাত একেবারেই ভঙ্গুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান তলানিতে ঠেকেছে। অটো পাশ মানবাধিকার লঙ্ঘণের আরেকটি উদাহরণ। ফলে মানবাধিকার বিষয়ে আমাদের আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে।’

মানবাধিকার গবেষক রঞ্জন কর্মকার বলেন, ‘প্রতিহিংসার পরিবর্তে প্রতিযোগিতার রজনীতিতে আসতে রাজনৈতিক দলগুলোকেই ভূমিকা রাখতে হবে। গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রতিহিংসা শব্দটি যায় না। যখনই গণতন্ত্র হুমকিতে পড়েছে আমরা তখনই আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে ওঠতে দেখেছি। রাজনীতি হবে আদর্শিক, ক্ষমতা নির্ভর নয়। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি একটি দলকে কিভাবে নিঃশেষ করে দেয়, তা আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেয়েছি।’

রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান (অব) বলেন, ‘জনসংখ্যার দিক থেকে আমরা অষ্টম বৃহৎ দেশ। তবে দক্ষ লোকজনকে সঠিক জায়গায় নিয়ে আসতে পারি নাই। ফলে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশ পিছিয়ে আছে। দেশপ্রেম থাকলেই মানবাধিকার রক্ষা সম্ভব। আশা করি দ্রুতই আমরা এসব সমস্যা উত্তরণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে পারব।’

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal