আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে চিনতেন পানি জাহাঙ্গীর হিসেবে। নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবেই সব জায়গায় পরিচয় দিয়েছেন। জাহাঙ্গীর আলম ৪০০ কোটি টাকার মালিক। এ তথ্য শেখ হাসিনা নিজেই ফাঁস করেন।
সেই জাহাঙ্গীরের এবার খোঁজ মিলেছে। দেশে নয়, বিদেশে আছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেনে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা ৩৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
পোস্টে জুলকারনাইন লিখেছেন, বহুল আলোচিত শেখ হাসিনার ‘পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম’কে আজ (স্থানীয় সময় বুধবার) নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে বেশ কিছু ডকুমেন্ট পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করাতে অপেক্ষমাণ দেখা যায়।
৪০০ কোটি টাকার বেশি লোপাট করে পরিবারসহ আমেরিকা পাড়ি জমানো জাহাঙ্গীর এ সময় কখনো টুপি পরে নিজের মাথাসহ পুরো মুখ ঢাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু গোপন ক্যামেরায় তিনি ঠিকই ধরা পড়ে যান বলে উল্লেখ করেন জুলকারনাইন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিএসসির এক গাড়িচালক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলো- জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।
এ প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা তখন বলেন, ‘আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।’
এরপর আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের এই দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে দেশজুড়ে নানা সমালোচনা হতে থাকে।
সরকার তখন তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। জব্দ করা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। পরে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম পরিবারসহ আমেরিকায় পালিয়েছেন।
গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ নিয়ে গড়েছেন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। প্রতারণার মাধ্যমে জাহাঙ্গীর ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।