গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান যেন না ঘটে, সে জন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ বছরের রক্তস্নাত আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিল স্বৈরশাসনের।
এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র নস্যাৎ ও সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতির পথচলা স্তব্ধ করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় ও বহুমাত্রিক, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। স্বৈরাচারী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। দীর্ঘ ৯ বছর আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।
তারেক রহমান বলেন, ‘সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর আবারও গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দুঃশাসনে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন নামিয়ে আনা হয়েছিল।
দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে অত্যাচার-নির্যাতনের অক্টোপাসে আঁকড়ে রাখা হয়েছিল। সারা দেশকে শ্বাসরুদ্ধকর কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। আজকের এই দিনে আমি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই স্মরণীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘স্বৈরাচারী এরশাদের দল আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সাথে দীর্ঘ ১৬ বছর একত্র হয়ে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মানুষের মৌলিক মানবাধিকারকে ক্রমাগতভাবে হরণ করেছিল।
তারা নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল। ৫ আগস্ট এই অপশক্তিকে প্রতিহত করে ছাত্র-জনতার বিপুল তরঙ্গ। এই পরাজিত শক্তির যাতে পুনরুত্থান না ঘটে সে জন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।’