মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপাসন, সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, সিপাহি বিদ্রোহ দমনের জন্য ১৮৬১ সালে হয়েছিল পুলিশ আইন। সেটা এখনো বহাল আছে| আর আমাদের সংবিধান ১৯৭২ সালের, সেটা অনেকে বদলাবার কথা বলছেন। অনেকে বলেন, আমাদের সংবিধান ভারতের সংবিধানের সাবস্টিটিউশন। আসলে তা নয়। আমাদের সংবিধান বেস্ট মডার্ন কনস্টিটিউশন। ইট ইজ বেটার দ্যান ইন্ডিয়া (এটা ভারতের চেয়ে ভালো)।
তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারগুলো দেওয়া হয়েছে, তা পুলিশকে শেখানো হয় না। পুলিশকে শেখানো হয় মার দিতে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘যৌন হয়রানি এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ও প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসক এই সভার আয়োজন করে।
তিনি আরো বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা শুধু দেশব্যাপী নয়, বরং বিশ্ব জুড়ে চলছে। ঘরে মার খেলেও নারী শেষ পর্যন্ত আপস করার চেষ্টা করে। মার খাওয়ার জন্য কোনো নারী জন্ম গ্রহণ করেনি। শুধু সন্তান উত্পাদনের জন্যেও নারীর জন্ম হয়নি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারী ইস্যুতে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে অ্যাওয়ারনেস, অ্যাকশন এন্ড এডভোকেসি ফর জেন্ডার ইকুয়াল এন্ড সেফ স্পেসেস ফর উইমেন এন্ড গার্লস প্রজেক্ট-অগ্নি কাজ করছে গাজীপুর ও রাজশাহী এলাকায়। ব্র্যাক এবং আসক এর বাস্তবায়ন করছে। সভায় অগ্নি প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন আসকের প্রকল্পের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আসমা খানম রুবা। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে গাজীপুরে ৬০৪ জন, রাজশাহীতে ৭৭৬ জন নারী জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। একই সময়ে গাজীপুরে ২১৩ জন এবং রাজশাহীতে ৮৫ জন নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গাজীপুরে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে ১১৬টি এবং রাজশাহীতে ৯টি। একই সময়ে যৌতুকের জন্য গাজীপুরে ৪০ জন ও রাজশাহীতে ২৪৫ জন নারী নির্যাতনের শিকার হন।
অনুষ্ঠানে বক্তরা যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও দ্রুত বিচার কার্যকর করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সভা সঞ্চালনা করেন আসকের সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবীর।