এজেন্সিপ্রতি হজযাত্রী নেওয়ার কোটা ১ হাজার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ৫০০ জনের কোটা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে এদিন বিকেলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, হজ এজেন্সিপ্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর কোটা ১ হাজার জন নির্ধারণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে সৌদি সরকার। হজ এজেন্সি মালিক বা পরিচালকদের দু-এক দিনের মধ্যে এ নির্দেশনা মোতাবেক লিড এজেন্সি গঠনসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের অনুরোধ জানাই।
ব্রিফিংয়ের পর হাব সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকেও বসেন ধর্ম উপদেষ্টা। সেখানে উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এতে সরকারের হাত নেই। সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১ হাজার করা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হজ এজেন্সিগুলো সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া, ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির শেষ দিন থাকলেও এখনও চুক্তি শুরু করতে পারেনি তারা। কোটা নিয়ে বারবার অনুরোধের কারণে সৌদি সরকার আমাদের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছে। এজেন্সি কোটা প্রথমে ২৫০ ও পরে ৫০০ করার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুবার সৌদি সরকার ও বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করি। এর পর কয়েক দফায় বৈঠক, ডিও লেটার দিয়েও এ ব্যাপারে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়নি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কোটা কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের চেষ্টার ঘাটতি ছিল না। হজ এজেন্সি যদি আমাদের দোষারোপ করে তাহলে ভুল হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত বুধবার সৌদি সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্য সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি-হোটেল ভাড়া, ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনও শুরু করা হয়নি। এসব কাজের সময়সীমা ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হলেও তারা কিছু করেনি।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা জানান, এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হচ্ছে না। এটি সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত ২৪ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
চলতি বছর মোট ৭৫৩টি হজ এজেন্সি হজযাত্রী পাঠানোর জন্য নিবন্ধন করেছে। তারা ১৩৪টি লিড এজেন্সির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। গত বছর ৬৯৫টি হজ এজেন্সি ২৫৯টি লিড এজেন্সির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। চলতি হজ মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ ছিল। এর বিপরীতে নিবন্ধিত হয়েছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন হজ পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. মোহাম্মদ ফারুক। এতে এজেন্সি মালিকরা বলেন, বিগত বছরগুলোয় হজযাত্রীর কোটা সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ জনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও হঠাৎ করেই সৌদি সরকার গেল ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন ৫০০ জনের কোটা রাখার নিয়ম চালু করে। সে অনুযায়ী কোটা পূরণও করেন তারা। হঠাৎ গত ৪ জানুয়ারি এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন কোটা ১ হাজার করে বিজ্ঞপ্তি দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। হাব সদস্যদের দাবি, এ কোটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, যা পূরণ করা অসম্ভবও বটে।