স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে মিয়ানমার সরকার ও আরকান আর্মির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি। বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ রক্ষার্থে যুদ্ধাহত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় ৮৭৬ জন মিয়ানমারের নিরাপত্তাকর্মী এদেশে ঢুুকে আত্মসমর্পণ করেছে। আবার তাদের ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে।’
আজ সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শন শেষে মিয়ানমারের আরকান আর্মির মংডু দখলের পর সীমান্ত পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সমস্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। টেকনাফের দমদমিয়া বিএডব্লিউটিএ ঘাটে দুপুর ২টায় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা ও সীমান্তবাসীকে রক্ষায় বিজিবির পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা নিশ্চিদ্র সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। সীমান্ত সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। ইতোমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য বাহিনীর জনবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে। নাফনদীতে টহল তৎপরতা জোরদার রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখনও সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সীমান্তবাসীর নিরাপত্তায় বিজিবি ও কোস্টগার্ড পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এতে সীমান্তবাসীর আতঙ্ক হওয়ার কারণ নেই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘মিয়ানমারে সৃষ্ট সমস্যার কারণে নতুন করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। নতুন করে যারা অনুপ্রবেশ করেছে তাদের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ, তাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত না হলেও মানবিক কারণে খাদ্যপণ্য ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে।’
মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাদকের জন্য বাংলাদেশে মি. বদিও বিখ্যাত ছিল। কিন্তু মাদক অনেক আগের সমস্যা। তবে মাদক রোধ করতে হবে, এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। কারণ, এটা শুধু আইন দিয়ে সমাধান করা সম্ভব না।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মিয়ানমারের গোলাগুলির কারণে নাফনদীতে আপাতত মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া টেকনাফে মাদক একটি বড় সমস্যা। এটা অনেক আগের সমস্যা। এ মাদক যেভাবে হোক নির্মূল করতে হবে। এজন্য মসজিদের ইমামদের ভূমিকা রাখতে হবে।’
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর হতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নে হেলিকপ্টারযোগে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন, দমদমিয়া বিওপি ও নাফ নদীতে বিজিবির ডিউটির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।
এসময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার একান্ত সচিব ও সহকারী একান্ত সচিব, টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. মহিউদ্দিন খান, ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।