‘শেখ হাসিনার অপেক্ষায় বাংলাদেশ, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; বিএসএল বাদশা ৭১’—এমন লেখা হঠাৎ ভেসে ওঠে বিপণিবিতানের ছাদে লাগানো একটি ডিজিটাল সাইনবোর্ডে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর যুবদল ও ছাত্রদলের স্থানীয় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সাইনবোর্ডটি ভাঙচুর করেন এবং তালা লাগিয়ে দেন ওই বিপণিবিতানের ফটকে। এ ছাড়া দফায় দফায় করা হয় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী এলাকার সমবায় মার্কেট নামের বিপণিবিতানে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাইনবোর্ডটি ওই বিপণিবিতানের মেমোরি কম্পিউটার নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সাইনবোর্ডটিতে লেখাটি ভেসে ওঠে। মুহূর্তেই এই লেখাসংবলিত সাইনবোর্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। তাঁরা সাইনবোর্ডটি ভাঙচুর এবং বিপণিবিতানটির ফটকে তালা দেন। পরে বিপণিবিতানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
মেমোরি কম্পিউটার নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. ফজলু প্রথম আলোকে বলেন, শাশুড়ি মারা যাওয়ার কারণে তিনি শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। কর্মচারীরা গত বৃহস্পতিবার দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। শুক্রবার দোকান বন্ধ থাকে। এরই মধ্যে গতকাল রাতে তিনি খবর পান, তাঁর দোকানের সাইনবোর্ডের লেখা পরিবর্তন করে কে বা কারা শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের (বিএসএল) নাম প্রচার করছে। বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিংবা তাঁর দোকানের কোনো কর্মচারী অবগত ছিলেন না। তৃতীয় কেউ তাঁকে বিব্রত করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিপণিবিতানের দোকানিরা তাঁর দোকান কয়েক দিন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকেও চৌমুহনীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা। সভায় বক্তারা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত রয়েছেন, অনতিবিলম্বে তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম বলেন, একটি নিষিদ্ধ সংগঠন কীভাবে ডিজিটাল স্ক্রিনে তাদের দলের প্রচার করে, সেটি খুঁজে বের করতে হবে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ডিজিটাল স্ক্রিনের লেখাটি নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় স্থানীয় যুবদলের নেতা-কর্মীরা বিপণিবিতানটি বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে বিপণিবিতান শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচারণার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা শনাক্ত করা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।