Home » জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না, সহায়তা করবে: মাহফুজ আলম

জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না, সহায়তা করবে: মাহফুজ আলম

by radesk
0 comments

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে আলোচনা করতে যাচ্ছে সরকার। তারা আশা করছে, এ আলোচনা আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে। ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না- জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সরকার ঘোষণাপত্রের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করছে। ঘোষণাপত্র আসবে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।

ঘোষণাপত্র নিয়ে কাদের সঙ্গে আলোচনা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, শুধু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বাইরেও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে, তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তবে সবার সঙ্গে বসে কথা বলা যাবে না। আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা বলা হবে।

ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ঘোষণাপত্র হবে উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘প্রেক্ষাপটটি অন্তত ঐকমত্যের আছে। ঐকমত্য আছে বলেই শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। পরবর্তী সময়ে আমরা কী করব, কতটুকু করব…এটা আলোচনা হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, আলোচনা আগামী সপ্তাহে শুরু ও শেষ হবে।

ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না, হবে সবার ঐকমত্যে

ঘোষণাপত্রের প্রস্তাব ইতিমধ্যে ছাত্ররা দিয়েছেন জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ঘোষণাপত্র কিন্তু সরকার দেবে না। সরকার ঘোষণাপত্রের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করছে। ঘোষণাপত্র আসবে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সব রাজনৈতিক পক্ষ, দল, সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী জুলাই ঘোষণাপত্র ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আলম বলেন, সরকার সবার সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। এতে হয়তো কিছু সময় বৃদ্ধি হতে পারে। কিন্তু এটা খুব বেশি দেরি হবে না। তিনি বলেন, যদি আলোচনার ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারি হয়, ১৫ জানুয়ারি হতে পারে। কিন্তু সরকার চাইছে সব পক্ষের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে করা হোক।

মাহফুজ বলেন, তারা (সরকার) মনে করেন, শিক্ষার্থীরা এই ধৈর্য ধারণ করবেন, সংযম দেখাবেন। এটা সবার মাধ্যমে যদি হয়, সর্বসম্মতিক্রমে হয়, তাহলে এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে। সবার জন্য ভালো হবে।

কী থাকতে পারে ঘোষণাপত্রে

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘ঘোষণাপত্রের দুটো অংশ থাকে। প্রথমে থাকে আমরা কী কারণে এটা বলছি এবং কী চাইছি। আমরা যে কারণে ঘোষণাপত্র চাইছি, আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের ঐকমত্য আছে যে শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম ও বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবে এই ফ্যাসিজমের যে ধারাবাহিকতা, সেটার একটি প্রেক্ষাপট হয়তো আমরা বর্ণনা করব…। আর ঘোষণাপত্রের দ্বিতীয় ভাগে হচ্ছে এই রাষ্ট্রটা কীভাবে চালিত হবে। কয়েকটি বিষয়ে হয়তো বিতর্ক থাকতে পারে অথবা এটা আরও বেশি আলোচনার দরকার হতে পারে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। এ ঘোষণাপত্র নিয়ে তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। হঠাৎ ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছিল।

অবশ্য পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই রাতে বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে জনমত তৈরিতে প্রচারপত্র বিলি ও জনসংযোগ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

 

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal