বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে বাজার সিন্ডিকেটের হাতবদল হয়েছে। দ্রব্যমূল্য এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তিনি অভিযোগ করেন, পুরোনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের লোকেরা জমিদারি হারানোর কথা বললেও নতুন সিন্ডিকেট একইভাবে মানুষকে শোষণ করে চলেছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) নাটোরের নবাব সিরাজ উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে এক বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা পুরোনো কিংবা নতুন— কোনো সিন্ডিকেটই দেখতে চাই না। মানুষের ওপর এই জুলুম বন্ধে আমরা বদ্ধপরিকর।”
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে জনগণের উপর জুলুম চালিয়েছে, সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে। এর আগের সরকারগুলোও বিভিন্ন সময় ক্ষমতায় বসে জনগণের আমানত খেয়ানত করা হয়েছে। কমবেশি এ জাতিকে সবাই কষ্ট দিয়েছে। সেবক সেজে ক্ষমতায় এসে তারা মালিক হয়ে বসেছিল।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী সরকারের শাসনামলে দেশ থেকে সম্পদ পাচার, গুম-খুন এবং নিপীড়ন বেড়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা অস্ত্র ব্যবহার করে দেশবাসীর উপরই অন্যায়ভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে। তারা সবার গায়ে হাত দিয়েছে।”
জামায়াত আমির উল্লেখ করেন, “বিগত সরকার ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে। তারা অবৈধভাবে একের পর এক নির্বাচন তাণ্ডব চালিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে। অথচ, নির্বাচন তাদের অধিকার নয়, যারা জনগণের উপর জুলুম করে।”
তিনি বলেন, “সর্বশেষ ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন দলের ও দেশের মানুষকে খুন-গুম হত্যা করেছে। হাতুড়ি বাহিনী দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ক্ষমতায় আসার আগেও ২০০৬ সালে লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করে তাদের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নেচেছিল। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায় তারা কতটা নিকৃষ্ট মানসিকতার। শেষ দিন ৫ আগস্ট তারা হাজার হাজার মানুষকে গণহত্যা করে দেশ ছেড়ে পালালো।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বর্তমান সরকার চাইলে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করবো, ইনশাআল্লাহ।” এসময়, ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এই দেশে সকলের মর্যাদা ও অধিকার সমান। আমরা মাইনরিটি-মেজরিটি শব্দগুলোই আর শুনতে চাই না। আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই মিলে দেশকে গড়ে তুলতে চাই।”