দ্রুত নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে যেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোটের মাধ্যমে যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করবেন। এটা নিয়ে কেউ খেলাধুলা করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে। এখানে অন্য কোনো কিছু করার নেই।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রামের ষোলশহরের বিপ্লব উদ্যানে র্যালিপূর্ব এক সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ‘আন্দোলনের নামে আজ আমরা নতুন নতুন বয়ান শুনছি। আন্দোলন ছিনতাই করে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। আন্দোলন কি হাইজ্যাক করার মতো বিষয়? আন্দোলন কি এমন জিনিস যে হাইজ্যাক করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন? বয়ান দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করে দেখবেন।
আমরা এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।’
ছাত্রদল দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতনের পরেও রাজপথে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল রাস্তায় থেকে জীবন দিয়ে পঙ্গু হয়ে, মামলা খেয়ে, পালিয়ে বেরিয়ে, ব্যবসা চাকরি হারিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে। এই ছাত্রদল, যারা এরশাদকে বিতাড়িত করেছে, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গুম, খুনের শিকার হয়েও কেউ বাড়ি ফিরে যায়নি।
দেশের সব মানুষ মিলে আন্দোলন করে আমরা ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি। সুতরাং আন্দোলনের মালিকানা কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমরা চাই না আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটি বিভক্তি সৃষ্টি হোক। আমরা চাই আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটা ঐক্য সৃষ্টি হোক। আন্দোলনের ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে আগামী দিনের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘মানুষ আন্দোলন করেছে তার গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক, ভোটাধিকার, রাজনৈতিক অধিকার এবং মানবাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। যে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। আজকে প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যাশা একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জনগনের কাছে দায়বদ্ধ থেকে জবাবদিহি সরকার গঠন করে বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরে দেওয়ার অপেক্ষা করতেছে। এ মালিকানা হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে সে যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করবে।’
তিনি বলেন,‘আপনাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচনি সংস্কার করে, জনগণের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণ সিদ্ধান্ত করবে কোন সংস্কার হবে, কোনটা হবে না। সেটা জনগণের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে হবে। এর বাইরে কোনো সুযোগ নেই।’
সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রা নিয়ে দুই নম্বর গেট থেকে শুরু করে জিইসি মোড় হয়ে ওয়াসা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।