Home » সরকার বা আদালত নিষিদ্ধ না করলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের: সিইসি

সরকার বা আদালত নিষিদ্ধ না করলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের: সিইসি

by radesk
0 comments

সরকার বা আদালত যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করেন, তাহলে দলটির নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটা মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হবে। এটাও শোনা যাচ্ছে যে কেউ কেউ মামলা করেছে কোর্টে। এ দল যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে, সেটার আদেশ চেয়ে। কোর্ট যদি রায় দেন, যেভাবে রায় দেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেব। আর না হলে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’

এ এম এম নাসির উদ্দীন আরও বলেন, ‘দল করার শাসনতান্ত্রিক অধিকার সবারই আছে। কোনো দল নিবন্ধন পাবে কি পাবে না, সেটার আলাদা বিধিবিধান আছে। কোনো দল শর্ত পূরণ করলে আমরা দেব। শর্ত পূরণ না করলে দেব না। পুরোনো যে দলের কথা বলছেন, এরা কিন্তু বহু আগে রেজিস্টার্ড।’

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘সুতরাং সরকার যদি কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, আমরা তাদের নিবন্ধন তো বাতিল করতে পারি না। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা কোর্টের সিদ্ধান্ত; এ দুইটার একটা হতে হবে, যেটার ভিত্তিতে হয়তো আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমি একদম গোড়া থেকেই বলে আসছি এটা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অথবা কোর্টের সিদ্ধান্ত। আমরা এ দুটোর দিকে চেয়ে আছি।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো আমাদের এখানে একটা রেজিস্টার্ড দল, বিধিবিধান অনুযায়ী। তাদের নির্বাচন করা না–করার সিদ্ধান্ত মূলত তাদের। তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা নির্বাচন করব না, আমরা তো জোর করে করাতে পারব না।’

সিইসি বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় বা কোর্ট থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে উই আর আনডান। ৭২ সালের পর থেকে তারা রেজিস্টার্ড অবস্থায় আছে। আমরা তো বাদ দিতে পারি না।’

১৭ বছর বয়সীদের ভোটার করার চলমান আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর জন্য সংবিধান আবার সংশোধন করতে হবে। সংবিধানে তো বলা আছে ১৮ বছর। যদি সংবিধান পরিবর্তন করে ১৭ বছর করার সিদ্ধান্ত হয়, আমরা সেভাবে কাজ করব।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা সংবিধান অনুযায়ী চলি। অন্য কারও নির্দেশনায় চলি না। সংবিধানে যদি পরিবর্তন আসে ১৭ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার যোগ্যতা রেখে, তাহলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। ভোটার তালিকা আইনে সংশোধনী আনতে হবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আগের নির্বাচন কমিশনের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিন্তা করছি না। আমাদের এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেই। সংস্কার কমিশন কি সুপারিশ দেয়, দেখে সিদ্ধান্ত জানাব।’ তিনি বলেন, ‘গত তিনটা নির্বাচনের আগের নির্বাচন আপনারা দেখেছেন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮–এর নির্বাচন আপনারা দেখেছেন। গত তিনটা নির্বাচন কেমন হয়েছে, আপনারাও জানেন, আমরাও বুঝি। এখন সেই পরিস্থিতি নেই।’

নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এখানে ডানে–বামে ওপরে–নিচে কোনো চাপ নেই। আমরা শুধু এখন বিবেকের চাপে আছি। আইনকানুন, শাসনতন্ত্র, বিধিবিধানের মধ্যে কাজ করার যে চাপ, সেটুকুর মধ্যে আছি। অন্য কোনো বহিঃশক্তির চাপ আমাদের ওপর নেই। যেটা আগের তিনটা কমিশনের ওপর ছিল। ওই তিনটা নির্বাচন ওই জন্যই হয়েছে। এ দেশে ভালো ইলেকশন করা সম্ভব। অতীতে করেছি আমরা।’

অন্য প্রশ্নের জাবাবে সিইসি বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, অনেক ফেক (ভুয়া) ভোটার আছে এখানে। অনেক বিদেশি ভোটার হয়ে গেছেন এখানে। অনেক ভোটার মারা গেছেন। মৃত ভোটার রয়ে গেছে। কিন্তু নাম কাটা যায়নি। ওটা বাদ দিতে চাই। ইলেকটোরাল প্রসেসের (নির্বাচনী প্রক্রিয়ার) প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। অনেকে মনে করেন, ভোটার হয়ে কী হবে। ভোট তো কেউ না কেউ দিয়ে দেবে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। বাড়ি বাড়ি যাব। টার্গেট হচ্ছে মাস ছয়েকের মধ্যে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কাজ শেষ করব।’

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘এবার আর আগের মতো ভোট হবে না। সেটার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। ’৯১, ’৯৬ ও ২০০১–এর মতো যাতে নির্বাচন করতে পারি।’

সিইসি বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছর রাজনৈতিক দলগুলো যে এত জেল খেটেছে, জান দিয়েছে, কেন? ভোটের অধিকারের কথা বলছে না? আমরা সে কাজটাই করে দেব। রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে থাকার কথা। তারা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের মূল দাবি ছিল ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন। এ ব্যাপারে ৫ আগস্টের পরে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি হয়েছে।’

সংখ্যানুপাতিক ভোটের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমাদের সংবিধানে সংযোজিত হয়নি। সংবিধান সংস্কারসংক্রান্ত যে কমিশন করা হয়েছে, ওনারা কি সাজেশন দেন, আমরা দেখি। ওনাদের সাজেশন যদি অনুমোদিত হয়, সরকার যদি সেভাবে সংবিধান সংশোধনের ব্যবস্থা নেয়, তাহলে আমরা সেভাবে নির্বাচন করব। আর না হলে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে যেভাবে আছে, সেভাবেই করতে হবে।’

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. নোমান হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ প্রমুখ।

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal