Home » আসছে নিয়ন্ত্রণমূলক বাজেট

আসছে নিয়ন্ত্রণমূলক বাজেট

by radesk
0 comments

সম্পদের সীমাবদ্ধতা ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নিয়ন্ত্রণমূলক বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফেরাতে আগামী ২০২৫-২৬ বাজেটের আকার খুব একটা বাড়ানো হবে না। একই সঙ্গে কমানো হবে অনুন্নয়ন ব্যয়। উন্নয়ন খাতেও বরাদ্দ কমানো হতে পারে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ মাসের গোড়ায় সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের নেতৃত্বে সরকারের সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার একটি সূত্র জানায়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া অর্থনৈতিক জঞ্জাল কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। একদিকে আর্থিক সংকট, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম চালানোর মধ্যেই ভারসাম্যহীনতার দিকে চলে গেছে সামষ্টিক অর্থনীতি। বৈদেশিক ঋণের বোঝা বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। আবার কমে গেছে সরকারের রাজস্ব আদায়। এরই মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ বাড়লেও সহায়তায় টান পড়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের গতিও মন্থর হয়ে গেছে। এমন অচলাবস্থার মধ্যেই নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

অর্থ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, মূল্যস্ফীতি কমাতে ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে এই প্রথম নিয়ন্ত্রণমূলক বাজেট দিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য পাবলিক সেক্টরের ব্যয়ের লাগামও টানা হচ্ছে। সেই সঙ্গে উন্নয়ন ব্যয়ের লাগামও আপাতত টেনে ধরার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এতে বাজারে নগদ টাকার প্রবাহ কমে আসবে। যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে আইএমএফ ও অর্থ বিভাগ। এমনিতেই দেশের অর্থনীতির গতি শ্লøথ হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে। এমন শ্লথ গতি আরও অন্তত দুই বছর চলমান থাকবে। এর ফলে চলতি বছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে আসতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে। তবে দুই বছর পর এই প্রবৃদ্ধি আবার বাড়তে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। এজন্য আপাতত নিয়ন্ত্রণমূলক বাজেট দিয়ে অর্থনীতির অচলাবস্থা  পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে যে কোনো মূল্যে বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে না পারলে মূল্যস্ফীতির লাগাম কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না বলে মনে করে আইএমএফ। এজন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সূত্র জানায়, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রাথমিকভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটের চেয়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া আগামী বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার হতে পারে ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি বাজেট বরাদ্দ আছে ২ দশমিক ৬৫ লাখ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে অর্থনৈতিক সমন্বয় পরিষদের বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অর্থ এবং পরিকল্পনা বিভাগকে বাজেট প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্র্তী সরকার মনে করে প্রতি বছর বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা ও সক্ষমতায় জোর না দিয়েও বাজেটের আকার বাড়িয়ে গেছে শেখ হাসিনার সরকার। এতে শুধু আকারের দিক থেকেই প্রতি বছর রেকর্ড করেছে বিগত সরকার। সেই তুলনায় আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার খুব একটা বাড়ছে না। একই সঙ্গে সময়ের আগেই চলতি অর্থবছরের বাজেট সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal