Home » মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েও পাননি তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী-কন্যা

মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েও পাননি তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী-কন্যা

by radesk
0 comments

ইউরোপের দেশ মাল্টার নাগরিকত্ব চেয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ও তার মেয়ে বুশরা সিদ্দিক। তবে তারা দেশটির নাগরিকত্ব পাননি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবামাধ্যম ফিন্যানশিয়াল টাইমস।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষের অভিযোগ থাকায় শাহীন সিদ্দিকের দুই দফায় করা নাগরিকত্বের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মাল্টার একটি অভিবাসন সংস্থা।

প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকীর চাচি শাহীন সিদ্দিক। ২০১৩ সালে মাল্টার নাগরিকত্ব-বিনিয়োগ প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স নামে একটি সংস্থা শাহীন সিদ্দিকের নাগরিকত্বের আবেদন ফিরিয়ে দেয়। বিদেশি নাগরিকদের মাল্টার নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে কাজ করত সংস্থাটি।

হাতে থাকা নথির বরাতে ফিন্যানশিয়াল টাইমস জানায়, ঢাকায় ‘প্রচ্ছায়া’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপারসন ছিলেন শাহীন সিদ্দিক। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘অবৈধভাবে সরকারি জমি দখলের’ অভিযোগ ছিল।

শাহীন সিদ্দিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। গত অক্টোবরে তারিক ও তার স্ত্রী শাহীনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

শাহীন সিদ্দিক ২০১৩ ও ২০১৫ সালে মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন। দ্বিতীয়বার তিনি তার মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের জন্যও আবেদন করেন।

বুশরা সিদ্দিক সম্পর্কে টিউলিপ সিদ্দিকের আপন চাচাতো বোন। দ্বিতীয়বার আবেদনে তাকে ইংল্যান্ডের নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিনি লন্ডনে স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা করছিলেন। বুশরা ‘প্রচ্ছায়া’-এর পরিচালক হিসেবেও কাজ করতেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় শাহীনের করা প্রথম নাগরিকত্ব আবেদন ২০১৩ সালে সরাসরি বাতিল হয়ে যায়।
কারণ ওই সময় গণমাধ্যমে প্রচ্ছায়ার বিরুদ্ধে ‘মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ঘুষ’ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

২০১২ সালে ‘প্রচ্ছায়া’ নামের সংস্থার নামে শাহীন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ঢাকায় মূল্যবান জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। ২০১৬ সালে তিনি এসব জমি বিক্রি করে দেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার স্বামী তারিক সিদ্দিকের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব জমি দখল করেন এবং সুযোগ বুঝে বিক্রি করেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।

শাহীন সিদ্দিকের আবেদন বাতিল করার বিষয়ে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স জানায়, তার নেতৃত্বাধীন প্রচ্ছায়া নামক একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকায় মূল্যবান জমি দখল করে।

তবে, দ্বিতীয়বার ২০১৫ সালের আবেদন করার সময় শাহীন প্রচ্ছায়ার কথা গোপন করে নিজেকে ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’–এর মালিক বলে উল্লেখ করেন। এরপর হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের একজন কর্মচারী এক ই-মেইলে জানান, এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আরো তথ্য চাচ্ছে মাল্টা কর্তৃপক্ষ।

২০১৫ সালের মার্চে শাহীন সিদ্দিক তার মেয়ের জন্য মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদন করেন। যৌথ আবেদনের নথি অনুযায়ী, শাহীন সিদ্দিকের মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদনের খরচ ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো। আর তার মেয়ের জন্য ২৫ হাজার ইউরো। পাশাপাশি, হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সকে ৭০ হাজার পাউন্ড ফি দিতে হতো।

ফিন্যানশিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় আবেদনে শাহীন সিদ্দিক তার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের একটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য জমা দেন। তার ওই অ্যাকাউন্টে তখন ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার ছিল, যা আবেদনের মাত্র দুই মাস আগে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস সম্পর্কে নথিতে কোনো কিছু উল্লেখ ছিল না।

এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের মুদ্রা বিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি তার ব্যাংক হিসাব থেকে বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি বিদেশে নিতে পারেন না।’

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal