Home » পাচারের টাকায় দুবাইয়ের দ্বীপে বিলাসী ফ্ল্যাট ট্রান্সকমের সিমিন ও ছেলের

পাচারের টাকায় দুবাইয়ের দ্বীপে বিলাসী ফ্ল্যাট ট্রান্সকমের সিমিন ও ছেলের

by radesk
0 comments

পাচারের টাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভিজাত শহর দুবাইয়ে ট্রান্সকম গ্রুপের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। গ্রুপটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলে ট্রান্সকম গ্রুপের হেড অব স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন যারাইফ আয়াত হোসাইনের নামে অন্তত ১৯ কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। আছে দামি গাড়িও। অনুসন্ধান বলছে, দেশ থেকে অর্থ পাচার করে দুবাইসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিজাত শহরগুলোতে তাঁরা কিনেছেন বিপুল সম্পদ।

ট্রান্সকমের সিমিন ও ছেলের বিলাসী ফ্ল্যাট দুবাইয়ের দ্বীপেঅনুসন্ধানে জানা গেছে, দুবাইয়ের অত্যন্ত পরিচিত ও আভিজাত্যে মোড়ানো কৃত্রিম দ্বীপ হলো পাম জুমেইরা। এখানকার সর্বাধুনিক, সমুদ্রতীরবর্তী এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল সড়ক ক্রিসেন্ট রোডের বালকিস রেসিডেন্সে অবস্থান সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলের অ্যাপার্টমেন্ট। স্থানীয় সূত্র জানায়, তাঁদের এই অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৫০ লাখ ৭০ হাজার দিরহাম, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা। বিদেশে এই বিলাসী সম্পদ কেনার বিষয়ে কোনো তথ্য জানে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠান এই অনুমোদন পেয়েছে। তবে এ তালিকায় নাম নেই ট্রান্সকম গ্রুপের। প্রতিষ্ঠানের সিইও সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলে যারাইফ আয়াত হোসাইনের নামে বিদেশে থাকা সম্পদ অবৈধ কিংবা পাচারের টাকায় কেনা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু নির্দিষ্ট খাতে বিদেশে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করেছে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে পারে। এয়ারলাইনস এবং তথ্য-প্রযুক্তি (আইটি) খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়াই নির্দিষ্ট পরিমাণ লেনদেন করতে পারে। তবে এসব খাতে ট্রান্সকম গ্রুপের কোনো ব্যবসা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের কোনো ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ী গ্রুপকে যদি বিদেশে অর্থ নিতে হয়, তাতে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে। পাশাপাশি কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশে বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি ব্যয় করে, এর জন্য তাঁকে অবশ্যই জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয়।

তিনি আরো বলেন, ট্রান্সকম গ্রুপের ব্যাবসায়িক কোনো বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বিদেশে তাদের যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক জানে না। এই বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি প্রতি পঞ্জিকা বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত ভ্রমণ ব্যয় হিসেবে বিদেশে নিয়ে যেতে পারেন। এটি একবারে বা একাধিকবারে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়।

সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলের নামে যেখানে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের সন্ধান মিলেছে, সেই পাম জুমেইরা হলো দুবাইয়ের একটি কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ, যেটি পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য বিবেচিত।

জানা গেছে, ট্রান্সকম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিডিয়া স্টার লিমিটেডের অধীনে পরিচালিত পত্রিকা প্রথম আলো। ট্রান্সকমের আরেক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিডিয়া ওয়ার্ল্ডের আওতায় রয়েছে ডেইলি স্টার। সিমিন রহমান এই গ্রুপের সিইও। তাঁর পিতা ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর সব প্রতিষ্ঠান সিমিনের দখলে রয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর প্রভাব দেখিয়ে তিনি দেশে-বিদেশে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal