Home » দলগুলো গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন না করলে পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্তি নেই: সলিমুল্লাহ খান

দলগুলো গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন না করলে পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্তি নেই: সলিমুল্লাহ খান

by radesk
0 comments

প্রতিটি দলের ভেতরে গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন না করলে পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন লেখক–অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পয়সাকড়ি কোথা থেকে পায়, তাদের কারা দান করে, বিদেশিরা কত দান করে, দেশে কত দান পায়, তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।

রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক অধিবেশনে অংশ নিয়ে সলিমুল্লাহ খান এ কথাগুলো বলেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী সংলাপের অংশ হিসেবে ওই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সংলাপের আয়োজক ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ। আজ ছিল সংলাপের প্রথম দিন।

সংলাপে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘ঐক্যে ফাটল না হলেও আঁচড় লাগছে। সংস্কারের প্রশ্নে সম্ভবত এখনো ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সংস্কার নিয়ে সবাই যে একমত হবেন, এমন কোনো কর্মসূচিও নেই। তাই আমরা বলি, কমপক্ষে কতটুকু সংস্কার না হলে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, গণতন্ত্রের মূল হচ্ছে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। দুটো বিষয়ে আমাদের একমত হওয়া দরকার। সংস্কারের ক্ষেত্রটা দোতলা একটা ঘর হিসেবে দেখি, ওপরের তলায় দুটো কক্ষ আছে—রাষ্ট্র ও জাতীয় সমাজ। যা কিছু পরিবর্তনের কথা আমরা এখন বলছি, নির্বাচনের মাধ্যমে একটা গণপরিষদ নির্বাচিত হবে। তাঁরা সংবিধান গ্রহণ করবেন অথবা পুরোনো সংবিধান পরিবর্তন করবেন। সেটা আমাদের ঐকমত্যের সাপেক্ষে হবে।’ তিনি বলেন, দ্বিতীয়টা হচ্ছে এই সমাজকে তৈরি করার জন্য যে জনমত গড়ে উঠেছে…স্কুল–কলেজ, জাতীয় ধর্মীয় সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন, ব্যবসায়ী সমিতিসহ সব রকমের প্রতিষ্ঠানকে বলা যায় দ্বিতীয় কক্ষ।

একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা না করেই যে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রবর্তন করা যায়, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনকে তার প্রমাণ বলে উল্লেখ করেন সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কিছু বিষয়ে আমাদের ন্যূনতম ঐকমত্য হতে হবে। তার জন্য যত সময় দরকার, ততটুকু আমরা নেব। কিন্তু সেই সময় অনন্তকাল হতে পারবে না। কারণ, মানুষ অনন্তকাল ধরে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে থাকতে যদি রাজি হতো, তাহলে তো শেখ হাসিনার অধীনে থাকলেও পারতেন।’ তিনি বলেন, ‘যদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ করা হয়, সেখানে বিনা ভোটে উচ্চকক্ষ নির্বাচন করা যাবে না। ভবিষ্যতের যেকোনো নির্বাচনে কিছু সংস্কার আমরা বাধ্যতামূলক মনে করি। শিক্ষাব্যবস্থায়ও কিছু সংস্কারের প্রশ্ন আছে।’

নিচের তলা নিয়ে খুব বেশি কথা হচ্ছে না বলে মনে করেন সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, সব জিনিস যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, দেশের মূল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা উৎপাদনব্যবস্থা, সেখানে স্থায়ী সংস্কার দরকার। সংস্কারের প্রশ্নে শুধু ওপরতলায় নয়, নিচের তলায়ও হাত দিতে হবে। এখানে সংস্কারের অনেক গোড়ায় হাত দিতে হবে। হাত দিতে হবে জীবনযাত্রার মানে।

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারগুলো কী কাজ করবে, তার ইশতেহারটা কোথায়, এই প্রশ্ন তুলে সলিমুল্লাহ খান বলেন, জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিতে এই জিনিসটা থাকা দরকার যে রাজনৈতিক দলগুলো অন্তত নিজের ভেতরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। প্রত্যেক দলের ভেতরে গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন না করলে পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পয়সাকড়ি কোথা থেকে পায়, তাদের কারা দান করে, কোন ঠিকাদার তাদের দান করে, বিদেশি কত দান করে, দেশে কত দান পায়, তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করার সুযোগ পাবেন। পুঁজির বিনিয়োগ, বিকাশ ও বিবর্ধনের বিরোধিতা আমরা করি না। কিন্তু সেটা হতে হবে দেশের আইনের অধীনে। আইনবহির্ভূত পুঁজির যে সঞ্চয় অনেকখানে হয়েছে গত ৫০ বছরে, এর ফলে সামাজিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে।’

You may also like

Leave a Comment

Rajneeti Ajkal is a leading news portal dedicated to providing comprehensive coverage of news, current affairs, political analysis, and the contemporary landscape of Bangladesh.

Rajneeti Ajkal, A Media Company – All Right Reserved. Designed and Developed by Rajneeti Ajkal