অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কার্যকরী রূপরেখা তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
এছাড়াও সম্প্রতি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে সারা দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অপসারিত কাউন্সিলরদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা চেয়ে নাগরিক কমিটির আহবায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারীর দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা।
তারা বলছে, আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী নয়, বরং জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার পক্ষে ভূমিকা পালনকারী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্থানীয় সরকারে ‘প্রশাসক’ পদে নিয়োগের কথা বলেন নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সংগঠনের মুখপাত্র সামান্তা শারমিন পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিল কর্তৃক ‘ছাত্র গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সিটি এবং পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহালের দাবি ও বর্তমান সরকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে’ আয়োজিত কাউন্সিল সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জনপরিসরে ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের বরাতে উক্ত সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ফ্যাসিবাদি আওয়ামীলীগ মনোনীত কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি করেননি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদি কাউন্সিলর কিংবা অন্য কোনো পদধারী ব্যক্তিকে স্ব-পদে বহাল চায় না। উক্ত সমাবেশে মূলতঃ ফ্যাসিবাদি আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ব্যতীত ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে ভূমিকা পালন করেছিল, তাদেরকে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এর ৪২(ক) ধারা মোতাবেক ‘প্রশাসক’ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করার ব্যাপারে মত ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদি সময়ে আওয়ামীলীগ নির্বাচনব্যবস্থা ও কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। জাতীয় পর্যায়ে ‘একতরফা নির্বাচন’, ‘রাতের ভোট’ এবং সর্বশেষ ‘ডামি নির্বাচন’ ইত্যাদি মডেলে জাতির সাথে আওয়ামী ফ্যাসিবাদিদের প্রতারণা এবং ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার এক মহোৎসব লক্ষ্য করেছে জাতি। স্থানীয় পর্যায়েও এই ধরনের নির্বাচনী মডেল অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু এতদ্বসত্ত্বেও ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসকল স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জয়লাভও করে। ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ গঠন করা ব্যতীত উক্ত পরিস্থিতির সঠিক পর্যালোচনা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, বুধবার প্রেসক্লাবে আওয়ামীলীগের আমলে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি সমাবেশে নাসিরুদ্দীনের দেওয়া বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা এ বিষয়টিকে ‘আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে সমালোচনায় মুখর হন।