রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গত বুধবার এক সমাবেশে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অপসারিত কাউন্সিলরদের একাংশের পুনর্বহালের দাবিকে কেন্দ্র করে চলমান বিতর্কের মধ্যে এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা বলেছে, ওই সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি করেননি। জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কাউন্সিলর কিংবা অন্য কোনো পদধারী ব্যক্তিকে স্বপদে বহাল চায় না।
আজ শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনের মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সিটি ও পৌর কাউন্সিলর সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জনপরিসরে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। ওই সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি করেননি। জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কাউন্সিলর কিংবা অন্য কোনো পদধারী ব্যক্তিকে স্বপদে বহাল চায় না।
বুধবারের সেই সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মূলত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত যেসব স্বতন্ত্র প্রার্থী জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাঁদের স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ অনুযায়ী ‘প্রশাসক’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে মত ব্যক্ত করেছিলেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী সময়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনব্যবস্থা ও কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘জাতীয় পর্যায়ে “একতরফা নির্বাচন”, “রাতের ভোট”, সর্বশেষ “ডামি নির্বাচন” ইত্যাদি মডেলে জাতির সঙ্গে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের প্রতারণা এবং ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার এক মহোৎসব লক্ষ করেছে জাতি। স্থানীয় পর্যায়েও এ ধরনের নির্বাচনী মডেল অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসব স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে জয়লাভও করে। ফলে “স্থানীয় সরকার কমিশন” গঠন করা ছাড়া এই পরিস্থিতির সঠিক পর্যালোচনা সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কার্যকর রূপরেখা তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে।’