জীবনের বিনিময়ে হলেও অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কথা দিতে চাই- জীবনের বিনিময়ে হলেও এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করবো। এছাড়া আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো।’
শুক্রবার সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আন্দোলন শুরু নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘অভ্যুত্থানে আমাদের যে লড়াই; এটা ৫ জুন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল। যখন ২০১৮ সালের কোটা নিয়ে জারি করা পরিপত্রটা বাতিল করা হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এবং সায়েন্স লাইব্রেরিতে একটি বিক্ষোভ হয়। এরপর থেকে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে দাঁড়িয়ে আছি। গত ৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট- এই সময়টুকুতে রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেননি। তারা একটা ফ্যাসিস্ট রেজিম আওয়ামী লীগের হুকুমমতো নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। বিগত ১৬ বছরে এই রকম একটা স্বৈরাচার সিস্টেমকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হতে দিয়েছে। এটাই এই বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দায়।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ চাইলে সবকিছু করা সম্ভব। তাদের প্রভাব মাঠপর্যায়ে সবচাইতে বেশি। পুরো বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ যে ভূমিকা পালন করতে পারে, আর কেউ সেটা পারে না। আমরা এখনো আপনাদের প্রতি আস্থা হারায়নি। আমরা আস্থাটা রাখতে চাই, আপনাদের কাজের মাধ্যমে সেটা প্রমাণ করতে হবে।’
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় যে সব শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধারা রয়েছেন- জেলা প্রশাসন এবং পুলিশসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা মিলে যদি তাদের দায়িত্ব আমরা ভাগ করে নিই। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শহিদ পরিবার থেকে একজন করে হলেও চাকরির ব্যবস্থা করি। আমাদের দায়িত্বগুলো সহজ হয়ে যায়। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আপনাদের কাজের মধ্য দিয়ে তাদের পাশে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগে নিহত ৭৪ জনের পরিবারের মধ্যে ৫৮ পরিবারের মাঝে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। এ সময় খুলনা বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধও বক্তৃতা করেন।