হাইকোর্ট কর্তৃক সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক অবৈধ রায় দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটি বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কোনো কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন সমকালকে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা সংস্কার কমিশনে প্রস্তাব জমা দিয়েছি। আমরা সেখানে বলেছি- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কোনো কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। এটা থাকা মানে বোঝায়, বাংলাদেশ বা এটা যে দেশে থাকবে সে দেশে গণতন্ত্রের গঠন প্রক্রিয়া- গণতন্ত্রের চলমান প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ নয়। একটি রাষ্ট্রের ৫৩ বছর পর এটা অপমানজনক।
সর্বোচ্চ দুইটি নির্বাচনে থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, তারপরও সংস্কার প্রস্তাবনায় আমরা বলেছি, আগামী দুইটা নির্বাচন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকতে পারে। তবে এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির এই মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এমন প্রক্রিয়ায় যাতে করে এটি শক্তিশালী হয়। নির্বাচন কমিশন যদি শক্তিশালী এবং স্বাধীন হয় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই প্রক্রিয়া-এই বাফার জোন প্রয়োজন হবে না। আমরা চাই নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা হোক।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে ৬৯ দফা সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয়। এতে তারা প্রস্তাব করে, জাতীয় নির্বাচনের সময় সরকার শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক কাজ পরিচালনা করবে, কোনো সিদ্ধান্ত ও আইন প্রণয়ন ইত্যাদি করতে পারবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রশাসন নির্বাচনের আগের তিন মাস নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসবে।
তারা প্রস্তাব করেন, রাষ্ট্রকে সরকারের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের বাইরে আনা গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আর প্রয়োজন হয় না। তবে আগামী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে।
সংস্কার প্রস্তাবে তারা আরও বলেন, সংসদ হবে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সচিবালয় থাকবে; এর জন্য নির্বাচনকালীন বাজেট বরাদ্দ হবে। কমিশনার নিয়োগে নীতিমালা থাকবে। কমিশনারদেরকে উচ্চ কক্ষে পাবলিক হিয়ারিংয়ের মুখোমুখি হওয়ার পর নিয়োগ দেওয়া হবে।