গত ১৬ বছরে একমাত্র দিল্লি ছাড়া আর কেউ (কোনো দেশ) শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত অহংকার করে নিজেদেরকে প্রভু মনে করে। তা না হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৬ ডিসেম্বরের দিন বললেন, ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়। তিনি তো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, বাংলাদেশের স্বাধীন ভূখণ্ডকে,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ছোট করলেন অবজ্ঞা করলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গোটা বিশ্ববাসী জানে, বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিলো— ওই জীবনের কি কোনও মূল্য নেই মোদী বাবু? আপনি বলছেন, এটা আপনাদের বিজয় দিবস এটা ভারতের বিজয় দিবস। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল এমএ জি ওসমানী সাহেব একটি কথা বলেছিলেন— ভারত যদি আমাদের সহযোগিতা নাও করতো, তারপরও বাংলাদেশ স্বাধীন হতো। কারণ যখন কোনো রাজনীতিবিদ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, সেই সময়ে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে একজন তরুণ মেজর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যে তরঙ্গ তৈরি করেছিলেন, সেই তরঙ্গে অন্য সেনা অফিসাররা বাংলাদেশের মানুষরা উদ্বুদ্ধ হন এবং তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
দিল্লির নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করেন, তাহলে ভারত থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার কেন? শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে— এই মনোকষ্টে আপনারা অসংখ্য মিডিয়ায় প্রতিদিন বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য রাখছেন। আপনাদের এত প্রেম কেন শেখ হাসিনার বিষয়ে? এটারও কারণ আছে। কারণ ভারতের বিএসএফ দুদিন-তিনদিন পর পর আমাদের সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করে, একমাত্র শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এটার প্রতিবাদ করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে চাই না। বাংলাদেশে একটি পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনে ১৬-১৭ বছরের নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ।