দেশের ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন কারণে ফেনী সেনসিটিভ জায়গায় অবস্থান করছে। তাই ফেনীকে ঝুকিতে ফেলতে ইতোমধ্যে বন্যা দিয়ে আক্রমণ করেছে প্রতিবেশী ভারত। বর্তমানে ফেনী সীমান্তে এসে নানান হুমকি ধমকি দিচ্ছে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে ফেনীকে বাঁচাতে হবে। এজন্য সরকারের শক্ত উদ্যোগের পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তায় ফেনীবাসীকেও সতর্ক হতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েকদিন আগে সিজিডি আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে দেশের শীর্ষ পন্ডিত ও বিশেষজ্ঞগণ এসব পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ বাঁচাতে ফেনীকে বাঁচাতে হবে। নতজানু ফরেন পলিসির পরিবর্তে, শক্তিশালী ফরেন পলিসি ঠিক করা গেলে বাংলাদেশ বাঁচবে এবং ফেনীও বাঁচবে। ভারত নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল জাতি গড়ে তোলা সময়ের দাবি। এই জন্য ভৌগলিক কারণে ফেনীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত আমাদেরকে যতটানা যুদ্ধ করে, ফরেন পলিসির মাধ্যমে আঘাত করবে তারচেয়ে পরিবেশ, বন্যা ও পানি দিয়ে আঘাত করবে। দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবার আগে ফেনীর মানুষকে সচেতন হতে হবে। কারণ ফেনী অবস্থানগত কারণে খুব বিপদজনক জায়গায় অবস্থান করছে।
বিলোনিয়া স্থলবন্দর, সোনাগাজীর ইপিজেড, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন কারণে ফেনী দেশের জন্য সেনসিটিভ জায়গায় অবস্থান করছে। তাই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ফেনী জেলার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। ফেনী তথা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হলে ফেনীতে যত দ্রুত সম্ভব ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করা আবশ্যক বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন। না হয় বাংলাদেশের ‘চিকেন নেক'(ম্যাপে দেখানো হয়েছে) হামলা করে ভারত চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ,বান্দরবন, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজার এই পাঁচটি জেলাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে। সেই হুমকি গত কয়েকদিন ধরে ফেনী সীমান্ত তারা দিয়ে যাচ্ছে।আগরতলায় বাংলাদেশ উপ হাই কমিশন অফিসে হামলা তারই নীল নকশার অংশ। ইতিমধ্যে ভারত সব কটি অভিন্ন নদীতে এক একটিতে একাধিক বাঁধ নির্মাণ করে নদীর পানিকে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। শুকনো মৌসুমে পানি আটকিয়ে রেখে তাদের নদী তীরবর্তী গ্রাম শহরগুলোকে শস্য শ্যামল করে তুলছে আর বাংলাদেশের এই অঞ্চলকে মরুভূমি বানিয়ে দিচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে ডুবিয়ে মারছে। অভিন্ন নদী ছাড়াও বাংলাদেশে উৎপত্তি বাংলাদেশে প্রবহমান ফেনী নদীকেও প্রায় দখল করে রেখেছে। সে নদীতে এখন বাংলাদেশীরা গোসল করতে পারেনা, গরুকে পানি খাওয়াতে পারেনা, জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি দিতে পারেনা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ তাদেরকে তাড়া করে। ধরে নিয়ে যায়। তারপর চোরাকারবারি, চোর ইত্যাদি অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে। যেমন গত বুধবার ৪ঠা ডিসেম্বর ‘২৪ ভোরে এক যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে ছেড়ে দেয়। বলে যে সে চোর। তারা ফেনীর মুহুরীর চর প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে। বিএসএফের পাহারায় তারা বাংলাদেশের চরে চাষাবাদ করে অথচ বাংলাদেশের প্রকৃত জমির মালিকরা চাষাবাদ করতে চাইলে বিএসএফ নির্বিচারে গুলী চালায়। ফেনীর স্থল বন্দর দিয়ে তারা তাদের যা কিছু প্রয়োজন সব নিচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশ তার চাহিদামত কিছু আনতে পারেনা। ফেনীর ১৩৩ কিঃমিঃ জুড়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত। এ পথে বাংলাদেশে আসে শুধু ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা ইত্যাদি। যা বাংলাদেশের যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গত কয়দিন যাবৎ ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুরা বিলোনীয়ায় এসে ডজন খানেক মাইক ফিট করে উস্কানীমূলক শ্লোগান, গালাগালি দিচ্ছে, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টাকে লক্ষ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালি, হুমকি দিয়ে নর্তন কুর্দন করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কখন কি হয় এই ভয়ে। কারন বিলোনীয়া সীমান্তে স্বাধীনতার পর থেকে বহুবার ভারত বাংলাদেশের বিডিআর/বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বহুবার সংঘর্ষ হয়েছে। এমনকি একটানা ১৯ দিন পর্যন্ত যুদ্ধ চলেছে, লক্ষ লক্ষ গুলী বিনিময় হয়েছে।