বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ড. ইউনুসের সরকার আমাদেরকে নানাভাবে গর্বিত করেছে। বেশিদিন আগের কথা নয়। মাত্র ৫ মাস আগেই সীমান্তের পাখির মত গুলি করে দেশের মানুষকে মারা হত। কিন্তু আমাদেরকে কোনো প্রতিবাদ না করে মাথা নিচু করে লাশটা নিয়ে আসতে হতো।
তিনি বলেছেন, তিস্তা প্রকল্প থেকে শুরু করে ফেনী নদীর পানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ট্রানজিট সুবিধাসহ সবকিছু ভারতের মর্জি মত হতো। কিন্তু এই সরকার আসার পরে আমরা ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারছি। প্রণয় ভার্মাকে কল করতে পারছি। আমরা সারা কুক’কে ডেকে বলতে পারছি যে, আপনারা যে রিপোর্ট পেশ করছেন সেটা সত্যের অপলাপ মাত্র।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) যমুনা টেলিভিশনের ‘রাজনীতি’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের বিষয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মনোভাবের কথা বলে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে সব সময়ই ভারতের বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ যতগুলো দল রয়েছে, তারা সবাই কিন্তু এক সুরে কথা বলছে। শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয় তখনও সে দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে একমতে আসতে দেখেছি। কেননা, হাসিনার যদি এই বিপদে আশ্রয় দেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে কেউ এভাবে ভারতের আনুগত্য করবে না। যার ফলে ভারত রাষ্ট্রের স্বার্থে কিন্তু তাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে।
রুমিন ফারহানা বলেন, বাংলাদেশে এখন দুর্যোগের ঘনঘটা চলছে। কেউ যদি মনে করে থাকেন যে, ৫ আগস্টের পরে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে এবং আমরা খুব সহজ একটি সময়ে প্রবেশ করেছি। তাহলে নিশ্চয়ই আমরা ভুল করবো। কেননা, আমরা দেখেছি, ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। অনেকেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। শুধু তাই না রাজনীতিবিদদের রাজনীতি থেকে দূরে সরাবার একটু কথাও আমরা শুনতে পাচ্ছি।
বিএনপির এই নেত্রী আরও বলেন, এ সব কিছু বিবেচনায় দেশের সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশি যে-সব দেশ চক্রান্ত করছে তাদের রুখে দিতে হবে ঐক্যভাবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রপাগান্ডার বিষয়টি উল্লেখ করে রুমিন বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে এটি কিন্তু এখন আর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। প্রতিবেশী একটি দেশ বুঝে শুনে মাঠে নেমেছে। খেয়াল করলে দেখবেন, ওই দেশের টেলিভিশনগুলো বলছে এক কথা কিন্তু পাশের স্কিনে দেখাচ্ছে অভ্যুত্থানের বিভিন্ন সংঘর্ষের ভিডিও ফুটেজ। তারা ইচ্ছকৃতভাবে অপতথ্য ছড়াচ্ছে।
ভারতীয় মিডিয়ার বড় একটা সুবিধা হলো তাদের সম্প্রসার ইংরেজিতে হয়। যে কারণে তারা খুব সহজেই ইউরোপ আমেরিকায় পৌঁছে যেতে পারছে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন কোনো মিডিয়া নেই। এই হলো আমাদের দেশের উন্নয়ন।
সবশেষে তিনি জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশের চলমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলার করার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন।