আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভাটির আয়োজন করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ আর রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হতে চায় না। পলিটিশিয়ানদের অনুরোধ করব, তারা যেন আমাদের এভাবে আর ব্যবহার না করেন। আমরা আর ব্যবহৃত হতে চাই না।
সামাজিক অবক্ষয়ের খানিকটা চিত্র তুলে ধরে শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, আগে যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে পাশ করত তারা টিচার হতো। আর এখন যারা পাশ করছে তারা কাস্টমস, ভ্যাট, পুলিশ কর্মকর্তা হতে চায়। কী কারণ আপনারা তো সব বুঝতে পারছেন, বোঝেন। এটা যদি অবস্থা হয় তাহলে বোঝেন এই সামাজিক পরিবর্তনটা কে আনবে? নীতি নৈতিকতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে আমাদের যেকোনো উপায়ে টাকা দরকার। এটা হয়েছে ১৫ বছরের দুঃশাসনের ফলে।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত এই পরিবর্তনটা আনতে হবে পলিটিশিয়ানদের। এটা আমার কাজ না। কাজ পলিটিশিয়ানদের। এসব পরিবর্তন আনার জন্য পলিটিশিয়ানরা মাথা ঘামাবেন। এটা আমাদের কাজ না। ওনারা চিন্তা করুক, সিদ্ধান্ত নিক, ওনাদের এই বাস্তবধর্মী কাজটা করতে হবে। নিজেদের পরিবর্তন আনতে হবে।
এ সময় কমিশনার চুরি ও ডাকাতি যাই ঘটুক এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীকে থানার দারস্থ হয়ে মামলার পরামর্শ দেন। শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আপনারা থানার সেবা নেবেন। আমার ওসিকে অলরেডি যা মেসেজ দেওয়ার তা দেওয়া আছে। ঘটনা ঘটলে আপনারা সত্য ঘটনায় মামলা করবেন। আমার এক থানায় ৫০০ মামলা হোক, তার জবাব আমি দোবো। কিন্তু, ঘটনা ঘটছে, ওসি মামলা নেবে না, এই ঘটনা চলবে না। আপনার বাসায় চুরি হয়েছে, ডাকাতি হয়েছে, আপনি যদি মামলা না করেন তাহলে তো বিচার হবে না। সো মামলা নিয়ে আর চিন্তা করবেন না। আমি ওসিদের বলেছি একটা থানায় ৫০০ মামলা হোক, আপনারা তদন্ত করেন আসামি ধরেন।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, চাঁদাবাজদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে, যারা চাঁদাবাজি করছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চাই। ফুটপাতে হকারদের কাছ থেকে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশও দেন ডিএমপি কমিশনার। আমি ১৩ দিন কমিশনার হিসেবে ডিএমপিতে যোগদান করেছি। এই কয়েকদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় ফুটপাতে চাঁদাবাজির বিষয়ে হাত দিতে পারিনি। আমি ফুটপাতে হকারদের কাছ থেকে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাই।
মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, একটি কথা বার বার উঠে আসছে চাঁদাবাজি। মোহাম্মদপুর এলাকায় অন্য কোনও এলাকার লোক এসে এখানে চাঁদাবাজি করছে না। আপনাদের (মোহাম্মদপুর) প্রতিবেশীরাই চাঁদাবাজি করছে। আপনি এবং আপনারা সংগঠিত হয়ে তাদের প্রতিরোধ করেন। তাদের বলেন চাঁদা দেবেন না। আমরা পুলিশ সব সময় জনগণের পাশে আছি।
মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ফুটপাতে হকারদের কাছ থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি হয়। গতকাল সোমবার ফার্মগেট এলাকায় ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল হয়। পরে প্রায় সাতজনকে এরেস্ট করা হয়।
মতবিনিময় সভায় ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক, তেজগাঁও বিভাগের ডিসি রুহুল কবির খান, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন। সভায় মোহাম্মদপুরবাসী ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালামসহ স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় মোহাম্মদপুরবাসী তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।