বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, সংস্কার কমিশনগুলো কীভাবে কাজ করছে, নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ, দেশের অর্থনীতি কোন দিকে যাচ্ছে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদন করেছেন অনুপ্রিতা দাস ও সাইফ হাসনাত।
কয়েক দিন আগে ঢাকায় সন্ধ্যাবেলায় একটি বাণিজ্যিক ভবনের নিচতলায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে একেবারে নতুন একটি দপ্তর নির্মাণের কাজ চলছে। ছাদ থেকে তার ঝুলছে। নতুন মেঝে বানানো হচ্ছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল বাংলাদেশের নতুন ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের ছক কষছেন।
মাস কয়েক আগেও এই শিক্ষার্থীরা সেসব হাজারো মানুষের মধ্যেই ছিলেন, যাঁরা শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন। কর্তৃত্ববাদী শাসন, নৃশংসতা আর দুর্নীতিতে ডুবে ছিল শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল।
এখন, এসব শিক্ষার্থী নতুনভাবে শুরু করতে বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়া যতই দীর্ঘস্থায়ী হোক কিংবা যতই প্রতিবন্ধকতা আসুক না কেন, তাঁরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে পুনর্গঠন করতে চান। তাঁরা একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং শাসনকাঠামোর স্বৈরাচার হয়ে ওঠা ঠেকাতে এমন একটি ব্যবস্থার কথা বলছেন; সেটা কোনো নেতাই উপেক্ষা করতে পারেননি।
২৬ বছর বয়সী ছাত্রসংগঠক আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক শক্তি এই মুহূর্তে খুবই ধোঁয়াটে অবস্থানে আছে।’ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে বলিষ্ঠ বার্তা দেওয়ার আশাবাদের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি দেশ চাই, যা স্থিতিশীল থাকবে এবং সামনে এগিয়ে যাবে।’
আজ থেকে ৫৩ বছর আগে ব্যাপক রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের জন্য এটা বেশ দুঃসাধ্য একটি কাজ। আর এর ভার এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তেছে, যারা অনির্বাচিত এবং এই সরকার নানা মত–পথের মানুষের সংমিশ্রণে গঠিত হয়েছে। এঁদের অনেকেরই দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আবার এমন শিক্ষার্থীও রয়েছেন, যাঁরা কেবল শুরু করেছেন। তাঁরা সবাই প্রচুর চাপের মধ্যে কাজ করছেন।